পুতিনের হুঁশিয়ারি: পশ্চিমা সহায়তা বন্ধ হলে ইউক্রেন থাকবে না
- By Jamini Roy --
- 29 January, 2025
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আবারও পশ্চিমা সহায়তা বন্ধের বিষয়ে সতর্ক করেছেন। তার মতে, যদি পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনকে আর কোনো সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা না দেয়, তাহলে মাত্র দুই মাসের মধ্যেই যুদ্ধের অবসান ঘটবে এবং ইউক্রেনের অস্তিত্ব থাকবে না।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রুশ সাংবাদিক পাভেল জারুবিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পুতিন বলেন, "ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার আলোচনা সম্ভব হলেও জেলেনস্কির সঙ্গে নয়, কারণ তিনি একজন অবৈধ শাসক।" তার বক্তব্যের পরপরই আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনার ঝড় ওঠে।
পুতিনের এই বক্তব্যের দিনই ইউক্রেনের বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটিতে ব্যাপক হামলা চালায় রুশ বাহিনী। ইউক্রেনের সেনাবাহিনী ও সামরিক স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করে মিসাইল ও কামানের হামলা হয়। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, তারা খারকিভের একটি অংশ দখল করেছে এবং কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেন ২৫০ জনের বেশি সেনা হারিয়েছে।
তবে ইউক্রেনের পক্ষ থেকেও প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা এসেছে। দেশটির সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, তারা কুরস্ক অঞ্চলে রুশ সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে পাল্টা হামলা চালিয়েছে, যার ফলে রাশিয়ারও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ইউক্রেন যুদ্ধের অন্যতম প্রধান চালিকা শক্তি ছিল পশ্চিমা অর্থ ও অস্ত্র সহায়তা। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর এই সহায়তা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গত ২০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণের পরপরই ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অর্থ সহায়তা স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন।
এই সিদ্ধান্তের ফলে আগামী ৯০ দিন ইউক্রেনসহ বিশ্বের সব দেশে মার্কিন সহায়তা বন্ধ থাকবে। এ নিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তার প্রশাসনকে মার্কিন অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পগুলোর বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন। তিনি বলেন, "আমি সরকারি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছি, ইউক্রেনে মার্কিন অর্থায়নে যেসব প্রকল্প স্থগিত রয়েছে সেগুলোর একটি প্রতিবেদন জমা দিতে। আমরা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সঙ্গে আলোচনা করব।"
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান এত সহজ নয়। দুই পক্ষই নিজেদের অবস্থানে অনড়, ফলে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন ইউক্রেনকে লাগাতার সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা দিয়ে গেছে, যা রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের মূল কারণগুলোর একটি।
এখন ট্রাম্প প্রশাসন যদি সত্যিই সহায়তা বন্ধ রাখে, তাহলে ইউক্রেনকে নতুন কৌশল নিতে হবে। তবে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার আগ্রাসন রুখতে ইউক্রেনকে একেবারে ছেড়ে দেবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে।